হজ্জের গুরুত্ব ও ফজিলত - হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত
প্রিয় পাঠক আপনারা প্রায় অনেকেই জানতে চান হজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে। ইসলামের দৃষ্টিতে হজ হলো পঞ্চম রোকন। আজকের এই আর্টিকেলে হজ পালনের সকল নিয়মকানুন সম্পর্কে আমরা আলোচনা করব। আপনারা যদি হজের এই সকল নিয়মকানুন সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি পড়তে থাকুন।
মুসলমান হিসেবে আমাদের সবারই হজ পালন করা উচিত। কিন্তু নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী হজ্জ পালন করার অত্যন্ত জরুরী। আর আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব হজের বিবরণ, হজ্জ এর গুরুত্ব এবং আরো অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে। আপনারা যদি এর সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক থাকেন। তাহলে সাথেই থাকুন।
পেজ সূচিপত্রঃ হজ্জের গুরুত্ব ও ফজিলত - হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত
- হজ্জের বিবরণ গুলো জানুন
- হজ্জের গুরুত্ব সম্পর্কে পড়ুন
- হজ্জের আহকাম সমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
- হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্তাবলী
- হজ্জ ফরজ হওয়ার মাসয়ালা
- হজ্জ আদায় শুদ্ধ হওয়ার শর্তাবলী
হজ্জের বিবরণ গুলো জানুনঃ
হজ্জ ইসলামের পঞ্চম রোকন।বিশ্ব মুসলমানদের মাঝে ঈমানী চেতনা, ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হজ পালন ফরজ করা হয়েছে।হজ্জ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে মহান বস্তুর সংকল্প করা, ইচ্ছা পোষণ করা এবং সাক্ষাৎ করা।শরীয়তের পরিভাষার নির্দিষ্ট সময় ইসলামের মহান একটি রোকন আদায় করার জন্য পবিত্র কা”বা ঘরের তাওয়াফ করা এবং এর সাথে আরও কিছু আনুষঙ্গিত কাজ করাকে হজ্জ বলা হয়।মক্কা গমনের ব্যয় বহন করতে সক্ষম এবং শারীরিক দিক থেকে সুস্থ এরূপ প্রত্যেক আকেল বালেগ মুসলমানদের উপর হজ্জ করা ফরজ।
হজ্জের গুরুত্ব সম্পর্কে পড়ুনঃ
মহান আল্লাহ তার বান্দাদের ওপর হজ্ব কে আবশ্যক করে দিয়েছেন।হজ্জ পালন করার মাধ্যমে মহান মহান আল্লাহ তাআলার নির্দেশ পালন হয়ে থাকে।অতএব, এব হজ্জ পালন করার মাধ্যমে যেহেতু মহান আল্লাহ তাআলার নির্দেশ আদায় করা হয়ে থাকে সেহেতু এর মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি অর্জন ও তত্ত্বাণিক হবে।আর তাকে সন্তুষ্ট করতে পারলে পরকালীন মুক্তি অর্জন অবশ্যই সম্ভব হবে।
আরও পড়ুণঃ
হাজ্জ হচ্ছে মহান আল্লাহর রাব্বুল আলামীন এর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য মুসলিম
জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তদীয় স্ত্রী বিবি জাহেরা এবং
পুত্র ইসমাইল আলাইহে সাল্লাম এর স্ত্রীর নির্দেশক।যখন কোন হাজী সেখানে হজ পালন
করে, তখন তাদের সব দুঃখ কষ্ট, কুরবানী ও আত্মত্যাগের অপরূপ চিত্র, প্রত্যেকের
হৃদয়ে ভেসে ওঠে।
শুধু তাই নয় হওয়ার নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে ভালোবাসার এক উজ্জ্বল
নির্দেশন হিসেবে কাজ করে।হজের মাধ্যমে প্রতিটি মানুষ রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম
ও তার সাহাবাগণের কবর জিয়ারত ও ইসলামী ঐতিহাসিক স্থানগুলো প্রত্যক্ষ
করে।যার ফলে তাদের অন্তরের মধ্যে রাসুল সাঃ এবং সাহাবাদের প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি
পায়।আর যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম কে ঈমানের সাথে ভালবাসবে তারা
তারই সাথে জান্নাতে অবস্থান করবে।
হজের দ্বারা মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতি অধিকতর শক্তিশালী হয়।হজ্জ এর মধ্য
গুরুত্বপূর্ণ মহান কাজটি পালন করার জন্য দৈনিক শক্তি ও আর্থিক সঙ্গতি উভয়টি
প্রয়োজন হয়। বিপুল পরিমাণ টাকার মায়কে ত্যাগ করে প্রিয়জনকে ত্যাগ করে সুদূর
কাবা ঘরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা দীর্ঘ ইমানের পরিচালক।ঈমানের বলে বলি আর না হলে
তা সম্ভব হয় না। যারা এ দীর্ঘ ঈমানের বহিঃপ্রকাশ ঘোটাতে পারবে তারাই পরিকালের
কামিয়ারী লাভ করতে সক্ষম হবে।
হজের মাধ্যমে মহান আল্লাহর অশেষ রহমত লাভ করা সম্ভব হয়।কারণ পবিত্র কাবা হচ্ছে
বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র।সমগ্র বিশ্বের জন্য যত রহমত বাজেট করা হয় তা সর্বপ্রথম
সেখানে তত্তীর্ণ হয়।একজন লোক যদি একনিষ্ঠ ভাবে হজ্জের কার্যাবলী সম্পাদন করে,
তবে সে মহান আল্লাহর রহমতে ধন্য হবে। মহান আল্লাহর রাব্বুল আলামিন সমাজ বদ্ধ হয়ে
থাকতে এবং সকল কাজ সম্মিলিতভাবে আদায় করতে বলেছেন।
হজ্জের আহকাম সমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
হজ্জ তিন প্রকারঃ- হজ্জের কেরান,হজ্জের তামাত্তো এবং হজ্জে
ইফরাত।নিম্নে প্রত্যেক প্রকার হজের আহকাম সংক্ষেপে পেশ করা হয়েছে।এই তিন প্রকার
হজ এর নিয়মাবলী সম্পর্কে জেনে নিন।
হজ্জে কেরানঃ ১। হজ্জ ও ওমরার নিয়তে একত্রে আহরণ বাধা ফরজ হজের শর্ত ২। ইহরামের জন্য গোসল করা ও নামাজ পড়া মুস্তাহাব ৩। তাল বিয়ার দোয়া পড়া সুন্নত ৪। রামলৈ ইস্তেবা সহ প্রথমে ওমরার তাও অফ করা ফরজ ৫। তাওয়াফের পর মাকামে ইব্রাহিমের দুই রাকাত নামাজ পড়া ওয়াজি ৬। ওমরার সাঈ করা ওয়াজিব ৭। রহমান ও ইস্তেবা সহ তাওয়াফে কুদুম করা সুন্নত ৮। উক্ত তাওয়াফের পর মাকামে ইব্রাহিমের দুই রাকাত নামাজ পড়া ওয়াজিব।
হজ্জের তামাত্তোঃ ১। ওমরার ইহরাম বাধা ফরজ ২। রমল ও ইস্তেবা সহ ওমরার তাওয়াফ করা ফরজ ৩। ওমরার সাঈ করা ওয়াজিব ৪। মাথা মোগান বা চুল ছাটা ওয়াজিব ৫। ৭ ই অথবা ৮ ই যিলহজ তারিখে পুনরায় হজ্জের ইহরম বাধা ফরজ ৬। ৯ তারিখে ও কুফে আরাফা ফরজ।
হজ্জের এফরাদঃ ১।১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে ফরজ তাওয়াফ করা ফরজ ২। সাফা মার ওয়ার সাঈ করা ওয়াজি ৩। বিদায়ী তাওয়াফ করা ওয়ালি ৪। কোরবানি করা মুস্তাহিব।
হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্তাবলীঃ
আমাদের দেশের বিভিন্ন হুজুর আলেমরা হজ ফরজ হওয়ার শর্তাবলী উল্লেখ করেছেন।আরে
এ সকল শর্তাবলী গুলো হলঃ-স্বাধীন হওয়া, সামর্থ্য থাকা, বালেগ হওয়া, ইসলাম
এবং আকুল।এ সমস্ত শর্তাবলী গুলো যে মানুষের ভিতর থাকবে তাহলে তার হজ ফরজ হবে।
আরও পড়ুণঃ ওয়ালটন মোবাইল প্রাইস ইন বাংলাদেশ
আবার যে সকল মানুষের হজে যাওয়ার মত সম্পত্তি বা টাকা-পয়সা আছে যেমনঃবিমান ভাড়া
বিয়ে হজে গিয়ে আবার ফিরে আসার মত যার টাকা পয়সা আছে তার জন্য হজ্জ ফরজ
হবে।মেয়েদের ওমরা হজ্জ পালনের জন্য স্বামীর টাকা পয়সা থাকা এবং তার নিজস্ব কেউ
থাকা। আর শর্ত হিসেবে বলা যেতে পারে তার পাওনা পরিষদ করা এখানে পাওনা পরিশোধ
করা বলতে বোঝানো হয়েছে কাফফারা সমূহ পরিশোধ করা এবং মানুষের টাকা পরিশোধ
করা।
বাইরে অন্যান্য দেশ বাদে যারা মক্কা শরীফের আশেপাশে থাকেন তাদের জন্য হজ্জ ফরজ
হওয়া শর্তাবলী গুলো হল তার নিজস্ব সম্পদ বা টাকা পয়সা দিয়ে হজ পালন করতে
আসা।বাইরের দেশ থেকে যারা হজ পালন করতে যায় তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী বিমান ভাড়া
দিয়ে তারা হজ পালন করে যাতায়াত করে।কিন্তু যারা মক্কা আশেপাশে থাকেন তারা হজ
পালন করার জন্য তাদের পায়ে হেঁটে হজ পালন করা উত্তম।তার যদি পায়ে হেঁটে আসার মত
সামর্থ্য না থাকে তাহলে তার নিজস্ব যান বাহন বা আসার মত সামর্থ্য থাকতে হবে তাহলে
তার জন্য হজ্জ ফরজ হবে।
হজ্জ ফরজ হওয়ার মাসয়ালাঃ
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কায়
আগমন হয়েছিলেন। তিনি সেখানে এসে বলেছিলেন মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের আনন্দ করার
জন্য দুটি দিন দিয়েছেন আর এ দুটি দিন হল ঈদ উল আযহা এবং ঈদুল ফিতর।এই দুটি ঈদ হল
আমাদের সমস্ত পাপ গুনাহ হোক মুছে দেওয়ার দিন।আমরা যদি এ দুটি ঈদে নামাজ পড়ে
আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে ক্ষমা চাই তাহলে আল্লাহ তা'আলা আমাদের সব গুনাহ মাফ
করে দিবেন।
তিনি আরো বলেছিলেন আমাদের কাছে দুটি নয় বরং তিনটি ঈদ আমাদের জন্য মহান আল্লাহ
তাআলা দিয়েছেন আর এর ভিতর হল একটি প্রতি সপ্তাহে আসে আর সেটি জুমার দিন।দুটি ঈদ
প্রতিবছর একবার করে আসে একটি হল ঈদুল ফিতর আরেকটি হলো ঈদ উল আযহা। আর একটি ঈদ
প্রতি সপ্তাহে ই আমরা জুমার দিন পালন করে থাকি।
হজ্জ আদায় শুদ্ধ হওয়ার শর্তাবলীঃ
আমাদের দেশে দেখা যায় যাদের অর্থ সম্পত্তি আছে তারা হজ পালন করে।কিন্তু এই হজ পালনেরও কিছু শর্তাবলী আছে আর এই শর্তগুলো যারা মানবে না তাদের জন্য হজ্জ ফরজ হবে না।আর এই শর্তগুলো হলঃ-ইহরাম বাধা, হজ্জ এর নিয়ত করা,তাহবিয়া, নির্ধারিত সময় হজ পালন করা, নির্দিষ্ট স্থানে গমন,মিকাত করা।
ইহরাম বাধাঃ-মিকাদের শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত স্থানের অতিক্রম করার পূর্বে ও তহবিল পাঠ করার মাধ্যমে হজের নিয় ত করাকে ইহরাম বাধা বলে।
হজ এর নিয়ত করাঃ-যে সকল ব্যক্তি হজ পালন করার জন্য নিয়ত করবে তাদেরকে
সর্বপ্রথম আগে ইহরাম বাঁধতে হবে আর ইউ ফরাম না বাধলে হজ পালন করা যাবে না।
নির্ধারিত সময় হজ পালন করাঃ-প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে হজ পালনের
সময় আসে।আর এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হজ পালন করতে না পারলে হজ শুদ্ধ হবে
না।
আরও পড়ুণঃ প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ
নির্দিষ্ট স্থানে গমনঃ-যে ব্যক্তি হজ পালন করবে সেই ব্যক্তিকে হজ্জের সময়
নির্দিষ্ট স্থানে গমন করতে হবে বা উপস্থিত থাকতে হবে।
মিকাতঃ-যে সকল হাজিরা হজ পালন করবে তাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান আছে।আর এ সকল স্থান এ হাজিদের যাওয়া বৈধ নয়। যাকে মিকাত বলা হয়।
তালবিয়াঃ-তালবিয়া হলো এক ধরনের দোয়া যা ইহারাম বাধার সময় থেকে তেলাওয়াত করা হয়।
লাইফ ফ্রিল্যান্সারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url